কম শক্তি, পেট ফাঁপা কিংবা ত্বকের সমস্যার মতো উপসর্গগুলোকে অনেকে ব্যস্ত জীবন বা ভুল খাদ্যাভ্যাসের ফল বলে মনে করেন। এর জন্য তাঁরা ব্যস্ত জীবন বা বাজে খাদ্যাভ্যাসকে দায়ী করেন। ফলে এই বিষয়গুলো উপেক্ষা করা হয়। কিন্তু এর পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে খাদ্য অ্যালার্জি বা অসহিষ্ণুতা। আমাদের পরিবর্তিত খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাবারের অত্যধিক ব্যবহার এবং অন্যান্য পরিবেশগত কারণে বিশ্বজুড়ে এই সমস্যাগুলো আরও সাধারণ হয়ে উঠছে। দুঃখজনকভাবে, অনেক মানুষ সাহায্য ছাড়াই কষ্ট পান। কারণ, তাদের উপসর্গগুলো অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার মতো হওয়ায় অনেক সময় মানুষ বুঝতে ভুল করেন। এভাবেই সেগুলো উপেক্ষা করা হয়।
খাদ্য অ্যালার্জি পরীক্ষা কেন করাবেন
পুষ্টির ক্ষেত্রে ‘একই মাপ সবার জন্য’ নীতিটি খাটে না। দুগ্ধজাত পণ্য, বাদাম বা ডিমের মতো খাবারগুলোকে অনেকে স্বাস্থ্যকর বলে মনে করেন। কিন্তু কারও কারও ক্ষেত্রে এসব অসুস্থতার কারণ হতে পারে। খাদ্য অ্যালার্জি পরীক্ষা বিশেষভাবে চিহ্নিত করতে পারে, কী আপনাকে প্রভাবিত করছে। এটি আপনাকে সাধারণ পরামর্শ অনুসরণ না করে, প্রয়োজনের সঙ্গে মানানসই একটি সুষম খাদ্য পরিকল্পনা তৈরিতে সাহায্য করে।
দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ প্রতিরোধ
কিছু খাবার খাওয়ার পরে কি আপনার কখনো শরীর খারাপ লেগেছে? অ্যালার্জিক খাবারগুলো বারবার খেলে শরীরে দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে। এটি ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম, একজিমা, মাইগ্রেন এবং ক্লান্তির মতো সমস্যার জন্ম দিতে পারে। এই ধরনের খাবারগুলো চিহ্নিত করে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিলে শরীর ভালো রাখা সম্ভব। এভাবে প্রদাহজনিত রোগের ঝুঁকি কমাতে পারেন
অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে সমর্থন
হজম এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতায় আপনার অন্ত্র একটি মূল ভূমিকা পালন করে। যে খাবারগুলো শরীর সামলাতে পারে না, সেগুলো খেলে পেট ফাঁপা, গ্যাস বা পেটে ব্যথার মতো অস্বস্তিকর লক্ষণ দেখা দিতে পারে। আপাতদৃষ্টে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পরেও এমন হতে পারে। অ্যালার্জি পরীক্ষা আপনাকে খুঁজে বের করতে সাহায্য করতে পারে, কোন খাবারগুলো আপনাকে জ্বালাতন করছে। এটি অন্ত্রের নিরাময়ে সাহায্য করতে পারে এবং উন্নত হজম ও শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করতে পারে।
শক্তি এবং মনোযোগ বৃদ্ধি
দুপুরের খাবারের পরে কি আপনার ক্লান্ত এবং মনোযোগহীন মনে হয়? এর কারণ হতে পারে খাদ্যের মধ্যে থাকা লুকানো সংবেদনশীলতা। এই খাবারগুলো শক্তি কমিয়ে দিতে পারে। আপনি যদি সেগুলো খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেন, তবে আপনি শক্তির মাত্রা এবং মনোযোগে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ করতে পারেন। এই পরিবর্তন আপনার উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে তুলতে পারে, পরিষ্কার চিন্তার মাধ্যমে কম সময়ে বেশি কাজ করতে সাহায্য করতে পারে।
খাদ্য অ্যালার্জির ৫টি উপসর্গ
যদি খাদ্য অ্যালার্জি পরীক্ষা করার কথা ভাবেন, তবে এই লক্ষণগুলো মনে রাখুন—
১। ঘন ঘন পেট ফাঁপা বা অ্যাসিডিটি। এমনকি আপাতদৃষ্টে স্বাস্থ্যকর খাবারের পরেও এমন সমস্যা হলে।
২। অকারণ ত্বকের সমস্যা, যেমন র্যাশ, ব্রণ বা একজিমা।
৩। কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বা বারবার মাথাব্যথা।
৪। মৌসুমি অ্যালার্জি বা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ার পরে বেড়ে যায়।
৫। খাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই মেজাজের পরিবর্তন বা ব্রেন ফগ অনুভব করা।