শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
Logo

সবুজ, লাল নাকি হলুদ, কোন ক্যাপসিকাম বেশি পুষ্টিকর

Journalist Name

উত্তরভূমি বার্তাকক্ষ

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫৬পিএম

সবুজ, লাল নাকি হলুদ, কোন ক্যাপসিকাম বেশি পুষ্টিকর

ক্যাপসিকাম শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, পুষ্টিতেও ভরপুর। কম ক্যালরিযুক্ত হলেও এতে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, বি৬ পটাশিয়াম, ফোলেট এবং নানা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। ফলে এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ত্বক ও দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে এবং দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি কমায়।

সালাদে কাঁচা বা হালকা ভাজা ক্যাপসিকাম প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখা ভালো। বাজারে প্রধানত তিন রঙের পাওয়া যায় সবুজ, লাল এবং হলুদ। যদিও সবই পুষ্টিকর, কিন্তু প্রতিটি রঙের নিজস্ব গুণাগুণ রয়েছে।

সবুজ ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ

১০০ গ্রাম কাঁচা সবুজ ক্যাপসিকামে থাকে

পানি: ৯৩.৮ গ্রাম

ক্যালরি: ২০

প্রোটিন: ০.৮৬ গ্রাম

কার্বোহাইড্রেট: ৪.৬ গ্রাম

ফাইবার: ১.৭ গ্রাম

ভিটামিন সি: ৮০.৪ মিলিগ্রাম

ভিটামিন এ: দৈনিক প্রয়োজনের ২ শতাংশ

ভিটামিন কে, ফোলেট ও পটাশিয়ামও থাকে ভালো পরিমাণে।

সবুজ ক্যাপসিকামের উপকারিতা

সবুজ ক্যাপসিকাম ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ও ত্বকের জন্য কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন ‘কে’ হাড় ও হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য উপকারী। ভিটামিন ‘এ’ চোখের স্বাস্থ্য ও ত্বকের জন্য প্রয়োজন। এ ছাড়া ফোলেট কোষ বিভাজন ও ডিএনএ গঠনে সহায়তা করে, আর পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট লুটিন ও জিয়াজ্যানথিন চোখকে সুরক্ষা দেয় এবং বয়সজনিত ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফাইবার থাকায় এটি হজমে সাহায্য করে এবং পেটের সমস্যা যেমন কোলোন ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।

লাল ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ

১০০ গ্রাম লাল ক্যাপসিকামে থাকে—

পানি: ৯২.২ গ্রাম

ক্যালরি: ২৬

প্রোটিন: ০.৯৯ গ্রাম

কার্বোহাইড্রেট: ৬.০৩ গ্রাম

ফাইবার: ২.১ গ্রাম

ভিটামিন সি: ১২৮ মিলিগ্রাম

এ ছাড়া থাকে ভিটামিন এ, বি৬, পটাশিয়াম, ফোলেট।

লাল ক্যাপসিকামের উপকারিতা

লাল ক্যাপসিকাম পুরোপুরি পাকা এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এতে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ আছে, যা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কোলাজেন তৈরি করে এবং ত্বককে স্বাস্থ্যবান রাখে। ভিটামিন এ ও বি৬ মস্তিষ্ক ও চোখের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এতে থাকা লাইকোপিন ও বিটা-ক্যারোটিন প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগ যেমন হৃদ্‌রোগ, ক্যানসার ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। লাল পেপারের মিষ্টি স্বাদ সালাদ, স্যান্ডউইচে ব্যবহার করা যায়।

হলুদ ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ

প্রতি ১০০ গ্রাম হলুদ ক্যাপসিকামে থাকে—

পানি: ৯২ গ্রাম

ক্যালরি: ২৭

প্রোটিন: ১ গ্রাম

কার্বোহাইড্রেট: ৬.৩ গ্রাম

ফাইবার: ০.৯ গ্রাম

ভিটামিন সি: ১৮৪ মিলিগ্রাম

এ ছাড়া থাকে ভিটামিন এ, বি৬, পটাশিয়াম, ফোলেট।

হলুদ ক্যাপসিকামের উপকারিতা

ভিটামিন ‘সি’ সবচেয়ে বেশি থাকে হলুদ ক্যাপসিকামে। এটি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কোষকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং প্রদাহ কমায়। ভিটামিন ‘এ’ চোখের জন্য, বি৬ মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয়। পটাশিয়াম ও ফোলেট হৃদ্‌যন্ত্র ও কোষের স্বাভাবিক কার্যক্রমে সহায়ক।

ফাইবার থাকায় হজম ঠিক রাখে, পেটের সমস্যা কমায় এবং কম ক্যালরিযুক্ত হওয়ায় ডায়েটের জন্য উপযুক্ত। হলুদ ক্যাপসিকাম সহজে খাওয়া যায়।

কোনটি বেছে নেবেন?

সব রঙের ক্যাপসিকামই পুষ্টিকর, তবে—

লাল ক্যাপসিকাম সাধারণত সবচেয়ে পুষ্টিকর। পুরোপুরি পাকা হওয়ায় এতে ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে।

হলুদ ক্যাপসিকাম ভিটামিন ‘সি’র দিক দিয়ে সবচেয়ে সমৃদ্ধ। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে দারুণ।

সবুজ ক্যাপসিকাম হালকা স্বাদের পাশাপাশি চোখ, হাড় ও হজমের জন্য উপকারী।

খাওয়ার সহজ উপায়

কাঁচা স্লাইস করে খাওয়া

টুকরো করে সালাদে মেশানো

হালকা ভেজে খাওয়া

সবুজ, লাল বা হলুদ তিন রঙের ক্যাপসিকাম পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। প্রতিটি রঙের নিজস্ব গুণাগুণ রয়েছে, তবে লাল ক্যাপসিকাম সাধারণত সবচেয়ে পুষ্টিকর, হলুদ রঙে ভিটামিন ‘সি’র পরিমাণ বেশি। প্রতিদিন বিভিন্ন রঙের ক্যাপসিকাম খেলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, চোখ ও ত্বকের স্বাস্থ্য, হৃদ্‌যন্ত্রের সুরক্ষা এবং কোষের সঠিক কার্যক্রম নিশ্চিত করা সম্ভব।