তেঁতুলের নাম শুনলেই আপনার জিভে পানি এসে যায়। এমন কেউ নেই যে তেঁতুলের নাম শুনেও জিভে পানি আসেনি। এমনকি যারা তেঁতুল একদমই পছন্দ করেন না, তাদের ক্ষেত্রেও এটি চিরন্তন সত্য। আচার তৈরিতে সবচেয়ে পরিচিত ফলগুলোর মধ্যেও একটি হচ্ছে তেঁতুল। একটু বেশিই টক স্বাদের এই ফলটি আমাদের শরীরের নানা উপকারেও কাজে লাগে। তেঁতুলে এমন অনেক স্বাস্থ্যগুণ রয়েছে, যা আপনার শরীরের একাধিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে রয়েছে ডায়াবেটিস রোগ। আর তেঁতুল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। আর রক্তে চিনির মাত্রাও ঠিক রাখে। এতে উপস্থিত এক ধরনের এনজাইম, যা রক্তে চিনির মাত্রা কমিয়ে দেয়। সে কারণে নিয়মিত তেঁতুল খেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। আবার তেঁতুলে উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকায়, কিডনি ফেলিওর ও ক্যানসার রোধ করতে সাহায্য করে। তাই ক্যানসার থেকে দূরে থাকতেও তেঁতুল খান।
তেঁতুলে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ও খনিজ থাকায় এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাকে। রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতেও তেঁতুল বড় ভূমিকা রাখে। ফলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমে। আর তেঁতুলের রস শরীরে এইচসিএ বা হাইড্রোক্সিসিট্রিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে। এই অ্যাসিড সহজে মেদ ঝরাতে ভূমিকা রাখে। তেঁতুলে উচ্চমাত্রায় ফাইবার আছে, আবার একই সঙ্গে এটি সম্পূর্ণ ফ্যাট ফ্রি।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন তেঁতুল খেলে ওজন কমে। তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি' আর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। এটি ত্বকের সুরক্ষা করে। এগুলো শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আবার যাদের ব্রণ আছে, তাদের জন্যও উপকারী তেঁতুল। যে কোনো ধরনের ক্ষত সারাতেও তেঁতুল অত্যন্ত কার্যকর। তেঁতুলে উপস্থিত হাইড্রক্সি অ্যাসিড ত্বকের এক্সফলিয়েশন করতেও সাহায্য করে। এর ফলে মরা কোষ উঠে যায় এবং ত্বক উজ্জ্বল দেখায়।
গবেষণায় আরও জানা গেছে, তেঁতুলে প্রচুর পরিমাণে ম্যালিক অ্যাসিড, টারটারিক অ্যাসিড ও পটাশিয়াম থাকে। এগুলো কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। আর পেপটিক আলসার বেশিরভাগ সময় পেটে ও ক্ষুদ্রান্ত্রে হয়। এই আলসার খুব বেদনাদায়ক। এটা নির্মূলে তেঁতুলের বীজের গুঁড়ো নিয়মিত খেলে পেপটিক আলসার সেরে যায়।