উত্তরভূমি বার্তাকক্ষ প্রকাশিত: ০৮ অক্টোবর, ২০২৫, ০৮:৪৯ এএম
পশ্চিমবঙ্গের অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। টালিউড ইন্ডাস্ট্রিতে পার করেছেন ৪০ বছর। দীর্ঘ এই সময়ে অভিনয় দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্য উচ্চতায়। টালিউড ছাড়িয়ে বলিউডেও নিজের ছাপ রেখেছেন। ক্যারিয়ারের এই সময়ে দাঁড়িয়ে প্রসেনজিৎ নাকি আয়নার সামনে নিজেকে একটাই প্রশ্ন করেন।
প্রসেনজিৎ বলেন, “দীর্ঘ ৪০-৪২ বছর ধরে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সঙ্গে বলা কথাগুলো সময়ের সঙ্গে ক্রমশ বদলাতে থেকেছে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে নিজেকে যে প্রশ্নটা করি সেটা হল- আর কী কী চরিত্রায়ণ এখনও পর্যন্ত করে ওঠা হয়নি। একদিন নায়ক জিৎ-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আর কী করা উচিত বল তো? খানিক ভেবে ও বলল, ‘সবই তো টাচ করেছো’। আর নিজেকে কীভাবে ভাঙব, আর কোন কাজগুলো করব, এটাই আমাকে ভাবায়। বারবার একটাই উত্তর ফিরে-ফিরে আসে। মনে হয়, সমুদ্র থেকে একঘটি জল তুলতে পেরেছি। এখনও অনেক কিছু করা বাকি। সেটাই আমাকে বাঁচিয়ে রাখে।’
দীর্ঘ এ যাত্রার মাঝে ক্লান্তি বোধ করলেও দর্শকের জন্য দাঁড়িয়েছেন ক্যামেরার সমানে। ভেবেছেন নতুন প্রজন্মের কথা। রোজ সকালে উঠে নিজেকে বলেছেন, যেকোনো একজনকে যেন আজ তিনি অনুরাগী তৈরি করতে পারেন। এক্ষেত্রে উদাহরণ টানলেন বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনকে।
প্রসেনজিৎ বলেন, “মুম্বাইয়ে থাকাকালে আমি অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে দেখা করি। আমার নতুন যে কোনও কাজ তাকে দেখাই, সেটা দেখে উনি শুভেচ্ছা জানান। সেবার সৃজিত মুখোপাধ্যায়ও ছিল আমার সঙ্গে। উনি ট্রেলার দেখে সৃজিতকে বললেন, ‘আমি অমিতাভ বচ্চন, তুমি আমার জন্য ভালো একটি চরিত্র দেখতে পারো।’ তার মতো একজন অভিনেতা কাজের কথা বলছেন! এই যে কাজের ক্ষুধা, সেটা আমিও অনুভব করি। সঙ্গে দর্শকদের নতুন কিছু উপহার দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি। যে কারণে আমার ‘কাকাবাবু’-র মতো কাজ করা। যাতে বাচ্চারা না বলে ‘আমার মা আপনার ফ্যান’, বরং আমার কাছে জানতে চায় ‘তোমার ক্র্যাচটা কোথায়?”
এ বার পূজাতে মুক্তি পাচ্ছে প্রসেনজিৎ-শ্রাবন্তী অভিনীত সিনেমা ‘দেবী চৌধুরানী’। এতে ভবানী পাঠক চরিত্রে অভিনয় করবেন প্রসেনজিৎ। সিনেমাটি নিয়ে দর্শকের আগ্রহ এখন তুঙ্গে। এই সিনেমার জন্যও নাকি আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি।
প্রসেনজিতের কথায়, “এমন চরিত্রে হঠাৎ করে পরের দিন থেকেই কাজ করা যায় না। সেই প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হয়। প্রথমে লাগে মানসিকভাবে শান্ত একটা ভাব। দ্বিতীয়ত, শারীরিক প্রস্তুতি। অভিনেতা হিসেবে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ, সারা পৃথিবী ভুলে গিয়ে নিজেকে যে কোনও চরিত্রের সঙ্গে আত্মস্থ করে তোলা। সেটা করতে খানিক সময় লাগে। তবে গোটা প্রসেসটা সুবিধা হয়েছে, লালন চরিত্রে কাজ করার সুবাদে। এই ধরনের প্রস্তুতিপর্বে আমি সবকিছু থেকে খানিকটা আলাদা হয়ে যাই। বলতে পারেন, নিজের একটা জগৎ তৈরি করে নিই।’
সূত্র: এই সময়।