উত্তরভূমি বার্তাকক্ষ প্রকাশিত: ০৭ নভেম্বর, ২০২৫, ০২:৫৬ এএম

উচ্চতার তুলনায় যদি আপনার ওজন বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আপনি দীর্ঘমেয়াদি নানান রোগে ভুগতে পারেন। সুস্থ থাকতে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক। তবে ওজন কমানোর আগে বের করতে হবে, উচ্চতার তুলনায় আপনার ওজন কতটা বেশি। সেই বাড়তি ওজন কত সময়ের মধ্যে কীভাবে কমানো নিরাপদ, এরপর তা জানতে হবে।
আপনার যদি পাঁচ থেকে ছয় কেজি ওজন কমাতে হয়, তাহলে তার জন্য জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনাই যথেষ্ট হতে পারে। যেমন চিনি, ফাস্ট ফুড ও ভাজাপোড়া খাবার না খাওয়া কিংবা ভাতের পরিমাণ কিছুটা কমিয়ে আনা। শরীরচর্চাও ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তবে আপনার যদি এর চেয়ে বেশি ওজন কমাতে হয়, তাহলে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েই তা করতে হবে।
কত দ্রুত ওজন কমাবেন?
সাধারণভাবে বলা হয়, প্রতি সপ্তাহে আধা কেজি থেকে এক কেজি ওজন কমানো নিরাপদ। অর্থাৎ এক মাসে আপনি সর্বোচ্চ চার কেজি ওজন কমাতে পারবেন। তবে বয়স, বিপাক হার ও অন্যান্য শারীরিক দিক বিবেচনায় কারও কারও জন্য মাসে তিন থেকে পাঁচ কেজি ওজন কমানোর নির্দেশনাও দেওয়া হতে পারে।
সেই হিসাব বিবেচনায় রাখলে মনে হতে পারে, একজন ব্যক্তির জন্য হয়তো ছয় মাসে ১৮ থেকে ৩০ কেজি ওজন কমানো নিরাপদ হতে পারে। আদতে বিষয়টা এতটা সহজ নয়। ব্যক্তিভেদে হিসাবটা আলাদা।
ধরা যাক, কারও উচ্চতার তুলনায় ২৫ কেজি ওজন বেশি আছে। এই বাড়তি ওজন তিনি কত দিনে কমাতে পারবেন, তা নির্দিষ্ট করে বলার সুযোগ নেই। কেবল একজন বিশেষজ্ঞই তাঁর শারীরিক অবস্থা যাচাই করে তা বলতে পারবেন।
যেভাবে ওজন কমানো নিরাপদ
একজন পুষ্টিবিদ বা ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ানের তত্ত্বাবধানে প্রাথমিকভাবে ওজন কমানো উচিত। একজন বিশেষজ্ঞ ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ওজন কমানোর নির্দেশনা দেন। সুস্থতার জন্য তাঁর কতটা ক্যালরি প্রয়োজন, তা ঠিক করে দেন তিনি।
শর্করা, আমিষ ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান ঠিক কতটা প্রয়োজন, সে অনুযায়ীই খাদ্যতালিকা ঠিক করা হয়। নির্দিষ্ট সময় পরপর তিনি ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা যাচাই করেন। সে অনুযায়ী পরবর্তী নির্দেশনা দেন।
দ্রুত অতিরিক্ত ওজন কমালে যে বিপদ হতে পারে
অতিরিক্ত ওজন কমাতে গেলে বা দ্রুত ওজন কমাতে গেলে আপনি দুর্বল হয়ে পড়তে পারেন। নিরাপদ প্রক্রিয়ায় ওজন না কমালে লিভার, পাকস্থলী বা অন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। রক্তস্বল্পতাও হতে পারে।
ত্বক ও চুলের ওপরও ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্যও হতে পারে। তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সমস্যা না হলেও দীর্ঘ মেয়াদে নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে। এমনকি ওজন কমানোর পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণে মৃত্যুও হতে পারে।
শেষ কথা
কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যের জন্য নয়, ওজন নিয়ন্ত্রণ করা উচিত নিজের সুস্থতার জন্যই। তবে ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম বা অন্যান্য মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠা কোনো পদ্ধতি অনুসরণ করতে গিয়ে বিপদে পড়তে পারেন আপনি। তাই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, কোনো পুষ্টি উপাদান খুব কমিয়ে ফেলে কিংবা একেবারে বাদ দিয়ে সুস্থ থাকার সুযোগ নেই।