শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
Logo
logo

শরীরের ব্যথা কমাতে নেহা ধুপিয়া পানীয় পান করেন


উত্তরভূমি বার্তাকক্ষ প্রকাশিত:  ০৮ নভেম্বর, ২০২৫, ০২:২২ এএম

শরীরের ব্যথা কমাতে নেহা ধুপিয়া পানীয় পান করেন

প্রাকৃতিক উপায়ে যদি শরীরের প্রদাহ কমানো যায়, তাহলে ওষুধপত্র সেবনের প্রয়োজন পড়ে না। বলিউড অভিনেত্রী নেহা ধুপিয়া সম্প্রতি নিজের শরীরের প্রদাহ বা ব্যথা কমানোর জন্য ২১ দিনের ঘরোয়া পানীয় পানের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন। তাতে তিনি উপকার পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে।

পুষ্টিবিদ রিচা গঙ্গানির পরামর্শে তৈরি এই বিশেষ ঘরোয়া পানীয় তিনি প্রতিদিন পান করেছেন। শরীরের ভেতরের প্রদাহ কমিয়ে সুস্থতা ফিরে পেতেই এই পানীয় পান করেন তিনি। নেহা তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডেলে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করেছেন। একটি ভিডিওতে তিনি এই পানীয় পানে নিজের শরীরের ইতিবাচক পরিবর্তনের কথা বলেছেন।

নেহার ভাষ্য, ‘২১ দিন এই পানীয় পানে আমি বুঝেছি, শরীর সুস্থ রাখতে শুধু বাহ্যিক যত্ন নয়, ভেতরের যত্নও জরুরি।’ প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা হলুদ, আদা, কালো গোলমরিচ ও কালিজিরা দিয়ে তৈরি একটি বিশেষ পানীয় নেহা ধুপিয়া পান করেছেন।

এই পানীয় তৈরির রেসিপিও জানা গেছে। পানীয়টি যেভাবে তৈরি করা যাবে:

কাঁচা হলুদ ১ টুকরা, কাঁচা আদা ৫ থেকে ৭টি, কালো গোলমরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ ও কালিজিরা ১ চা-চামচ নিয়ে সামান্য পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি আইস কিউব ট্রেতে ঢেলে ফ্রিজে রাখুন। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কাপ হালকা গরম পানিতে একটি কিউব দিয়ে ১ চা-চামচ এমসিটি তেল যোগ করে পান করুন। এখানে এমসিটি তেল সম্পর্কে একটু বলে রাখা ভালো। মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইডস বা এমসিটি তেল মূলত একধরনের ফ্যাট, যা নারকেল বা পাম তেল থেকে তৈরি হয়। এটি দ্রুত হজম হয় ও শরীরে শক্তি সরবরাহ করে। এই তেল ওজন কমাতে, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে।

তবে এই তেল ঘরে না থাকলে ঘি, নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েলও ব্যবহার করা যায়।

ব্যথানাশক এই পানীয়ের উপকারিতা

এই পাঁচটি উপকরণের প্রতিটিতে রয়েছে অনন্য পুষ্টিগুণ, যা শরীরের প্রদাহ কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। হলুদ ও আদায় থাকা কারকিউমিন এবং জিঞ্জেরল নামে শক্তিশালী এক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা প্রদাহ প্রতিরোধে কাজ করে। কালো গোলমরিচে থাকা পাইপেরিন কারকিউমিনের শোষণ বাড়ায়। কালিজিরা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। অন্যদিকে এমসিটি অয়েল, ঘি, নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ শোষণে সাহায্য করে। নিয়মিত তিন সপ্তাহ এই পানীয় পান করলে প্রদাহ কমে, হজমশক্তি বাড়ে এবং সারা দিন শরীর থাকে তরতাজা। ২১ দিন এই পানীয় পান করে নেহা ধুপিয়া জানিয়েছেন, তাঁর অন্ত্রের স্বাস্থ্য আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে, ত্বক আগের চেয়ে উজ্জ্বল দেখাচ্ছে এবং শরীরের প্রদাহ বা ব্যথা কমে গেছে। এ ছাড়া পেট ফাঁপার সমস্যাও অনেকটাই সেরেছে।

তবে সতর্কবার্তাও রয়েছে। রিচা গঙ্গানির এই পানীয় পানের চ্যালেঞ্জ শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কারণ কিছু নির্দিষ্ট শারীরিক অবস্থায়, যেমন পিত্তথলির সমস্যা, রক্ত পাতলা করার ওষুধ খাওয়া বা অ্যাসিডিটির প্রবণতা থাকলে হলুদ ও আদা কতটুকু পরিমাণে খাওয়া যাবে, সে বিষয়ে জেনে নেওয়া আবশ্যক। নয়তো উপকারের পরিবর্তে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

তিন সপ্তাহের মধ্যেও কেউ যদি শরীরে প্রদাহ কিছুটা কমে যাওয়া বা হালকা স্বস্তি অনুভব করেন, সেটি ইতিবাচক লক্ষণ। তবে বিপাকীয় বা দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহ কমাতে সময় লাগে এবং এর জন্য জীবনযাপনে ধারাবাহিক পরিবর্তন জরুরি।