উত্তরভূমি বার্তাকক্ষ প্রকাশিত: ০৮ নভেম্বর, ২০২৫, ০২:১৭ এএম

বর্ষা মানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর রূপ। এ বর্ষা আপনাকে হয়তো কবিতা ভাবায়, মনে করিয়ে দেয় পুরোনো কোনো গানের সুর। অথবা ছুটির দিনের দুপুরে ঝুম বর্ষায় আপনার ইলিশ-খিচুড়ি খেতে মন চাইতেই পারে। কিন্তু আপনার বাসার খুদে সদস্যটির এতকিছু বোঝার বালাই নেই। তার দুরন্তপনাই তার শৈশবের সৌন্দর্য।
তাতে শীত হোক, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা, শিশুর আনন্দময় জগতে তেমন কোনো পরিবর্তন আনে না। শিশুর যেহেতু সবকিছুর প্রতি খেয়াল রাখার দায়িত্ব কিন্তু বাড়ির বড়দেরই। এ বর্ষায় আপনার যখন এককাপ ধোঁয়া ওঠা চা নিয়ে জানালার পাশে বসতে ইচ্ছা করবে, শিশুর দুরন্ত মন তখন চাইবে এক ছুটে ছাদে কিংবা উঠোনে গিয়ে বৃষ্টির পানিতে গোসল সেরে নিতে।
বর্ষার সৌন্দর্যের পাশাপাশি আছে আরেক রূপ। এ সময় মশাবাহিত রোগ থেকে শুরু করে আরও কিছু অসুখের ভয় থাকে, তাই শিশুদের প্রতি বাড়তি যত্নশীক হওয়া জরুরি।
কেমন পোশাক পরাবেন
সব ঋতুতেই শিশুর আরাম কিংবা স্বস্তির কথা ভেবে তার পোশাক নির্বাচন করবেন। কিছু পোশাক থাকে, যেগুলো পরলে হয়তো শিশুকে দেখতে অনেক সুন্দর লাগে। কিন্তু তার জন্য আরামদায়ক নয়। গায়ে পরানোর কিছুক্ষণ পরই দেখবেন শিশু এদিক-সেদিক চুলকাতে শুরু করে। তার মানে এ ধরনের পোশাকে তার অস্বস্তি হয়।
এ বর্ষায় শিশুকে আরামদায়ক পোশাক পরতে দিন। বৃষ্টি হলে কোনো কোনোদিন তাপমাত্রা কিছুটা কমে যেতে পারে। সেদিকে খেয়াল রেখে আবহাওয়া অনুযায়ী তাকে পোশাক পরিয়ে দিন। সহজে বাতাস চলাচল করে ও শুকিয়ে যায়, এমন পোশাক পরান। স্কুলে কিংবা বাইরে গেলে শিশুকে রেইনকোট পরাতে ভুলবেন না। এতে হুটহাট বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা লেগে যাওয়ার ভয় থাকবে না।
শিশুকে নিয়ে বাইরে গেলে ব্যাগে অবশ্যই তোয়ালে রাখবেন। যেন ভিজে গেলেও সঙ্গে সঙ্গে মুছিয়ে দেওয়া যায়। এ ছাড়া সম্ভব হলে তার বাড়তি পোশাক সঙ্গে রাখুন। যেন প্রয়োজনে পরিবর্তন করা যায়।
শিশুকে কী খাওয়াবেন
খাবারের বিষয়ে আসলে শুধু শিশু নয়, বরং সতর্ক হতে হবে সবাইকেই। কারণ শরীরের জন্য ক্ষতিকর খাবার শুধু শিশু নয়, বড়দেরও অসুখের কারণ হতে পারে। বাইরের ভাজাপোড়া খাবার, রাস্তার ধারের কাটা ফল বা শরবত তো খাওয়া চলবেই না, বাড়িতেও খাবার তৈরির ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর পদ্ধতি বেছে নিতে হবে।
শিশুকে আপনারা যা খান, তাই খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। সবার জন্য সুষম খাবারের ব্যবস্থা করুন। খাবার খাওয়ার সময় পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসে খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে পারিবারিক বন্ধনও দৃঢ় হবে। খাওয়ার আগে ও পরে শিশুর হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়েছে কি না সেদিকে খেয়াল করুন। শিশুকে নিজের হাতে খেতে শেখান। মৌসুমি সবজি ও ফল বেশি বেশি খেতে দিন। এ ছাড়া প্রতিদিন একই ধরনের খাবার না দিয়ে মাঝে মাঝে খাবারে ভিন্নতা আনতে পারেন। এর পাশাপাশি প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পানের বিষয়টিও নিশ্চিত করুন।
শিশুর ত্বক ও চুলের যত্ন
শিশু বলে কি তার ত্বক ও চুলের যত্ম নিতে হবে না? নিশ্চয়ই হবে! বর্ষায় যেহেতু ত্বক ও চুলের বিভিন্ন সমস্যা বেড়ে যেতে পারে, তাই এ সময় শিশুর প্রতি বাড়তি যত্নশীল হতে হবে। শিশুর মাথায় যেন খুশকি না হয় সেদিকে খেয়াল করুন। শিশুর জন্য তার উপযোগী সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যবহারের প্রয়োজন নেই, সপ্তাহে দুদিন ব্যবহারই যথেষ্ট। এ ছাড়া নিয়ম করে শিশুর মাথায় তেল ব্যবহার করুন। এতে তার স্ক্যাল্প কোমল থাকবে।
শিশুর ত্বকে মানানসই লোশন ব্যবহার করুন নিয়মিত। এতে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। বাইরে থেকে যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি শিশুর প্রয়োজনীয় পানি পানের দিকে মনোযোগী হোন। বাইরে থেকে কেনা জুস কিংবা কোল্ড ড্রিংকস নয়, শিশুকে বিশুদ্ধ পানি, বাড়িতে তৈরি শরবত, ডাবের পানি ইত্যাদি খেতে দিন।