বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর মানসিক বিকাশ, মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা ও সৃজনশীলতা বাড়াতে বই পড়ার অভ্যাস অপরিহার্য। গল্পের বই শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়; এগুলো শিশুদের কল্পনার জগৎ গড়ে তোলে, নৈতিক শিক্ষা দেয় ও ভাষা দক্ষতাও বাড়ায়। তাই ছোটবেলায় বইয়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।
বই পড়া কেন দরকার?
গল্পের বই শিশুদের পরিচয় করায় নতুন জগৎ, নতুন ভাবনা ও নানা ধরনের চরিত্রের সঙ্গে। রূপকথা হোক বা অভিযান সব গল্পই শেখায় সহানুভূতি, দায়িত্ববোধ ও মানবিকতা। ফোন বা টিভি যেখানে চোখের সামনে তৈরি ছবি দেখায়, বই সেখানে শিশুদের কল্পনার পর্দায় নিজে নিজেই ছবি আঁকতে শেখায়। এর ফলেই মনোযোগ বৃদ্ধি পায়, ভাষা দক্ষতা বাড়ে ও কল্পনাশক্তি হয় প্রখর।
অভিভাবকের ভূমিকাই সবচেয়ে বড়
শিশুদের বই পড়ার আগ্রহ তৈরি করতে বাবা-মায়ের ভূমিকাই প্রধান। অভিভাবকেরা যদি নিজেরা বই পড়েন, সন্তানের মধ্যেও সেই আগ্রহ সহজেই জন্ম নেয়। প্রতিদিন ঘুমোনোর আগে একসঙ্গে গল্প পড়া বা বইয়ের ছবি দেখে সময় কাটানো বইকে আনন্দের উৎস করে তুলতে সাহায্য করে।
কিভাবে গড়ে তুলবেন বই পড়ার অভ্যেস?
ছবির বই দিয়ে শুরু করুন: ছোটদের জন্য বড় বড় গল্প নয়, রঙিন ছবি ও সহজ ভাষার বই বেশি উপযোগী।
স্ক্রিন দূরে রাখুন: বই পড়ার সময়ে টিভি বা মোবাইল যেন একেবারে বন্ধ থাকে। অভিভাবকের মনোযোগও তখন শুধু বইয়ের দিকেই থাকা দরকার।
প্রতিদিন সময় নির্ধারণ করুন : রোজ অন্তত ১৫ মিনিট বই পড়ার সময় বরাদ্দ করুন। সেটি সকালে, বিকেলে বা ঘুমোনোর আগে; যেকোনো সময় হতে পারে। কখনো মিস হলে, পরে বেশি সময় দিন : কোনো দিন পড়া না হলে পরের দিন খানিকটা বেশি সময় দিন, তাতে আগ্রহ ধরে থাকবে।
পুরস্কার হিসেবে দিন বই : ভালো কাজে উৎসাহ দিতে খেলনা নয়, উপহার দিন গল্পের বই। সন্তানের পছন্দ অনুযায়ী বিজ্ঞান, প্রাণী বা রূপকথার বই বেছে নিন।
স্ক্রিনটাইম কমাতে হবে : মোবাইল বা টিভির প্রতি আসক্তি শিশুদের বই থেকে দূরে ঠেলে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুকে খাওয়াতে বা চুপ করাতে স্ক্রিনের আশ্রয় না নিয়ে, বইয়ের পাতার সঙ্গে পরিচয় করানো অনেক বেশি কার্যকর। স্ক্রিনের সীমিত ব্যবহার ও বইয়ের নিয়মিত সংস্পর্শই তৈরি করবে ভারসাম্য।
সূত্র: এই সময়