দৈনন্দিন কাজে প্লাস্টিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। খাবারের পাত্র, শিশুদের খেলনাসহ সবখানেই ব্যবহৃত হচ্ছে এই প্লাস্টিক। তাই কোন ধরনের প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন, তা নিয়ে সতর্ক হওয়া জরুরি। গবেষণা বলছে, কালো প্লাস্টিকে থাকে এমন সব রাসায়নিক, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
মার্কিন গবেষণা ও পরামর্শক সংস্থা ‘টক্সিক-ফ্রি ফিউচার’-এর এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। কালো প্লাস্টিকে একধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা আগুন ধরার ঝুঁকি কমানোর জন্য প্লাস্টিকে মেশানো হয়।
কালো প্লাস্টিকে ডেকা-বিডিই, টিবিবিপিএ এবং আরডিপির মতো রাসায়নিক থাকে। এসব বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির জন্য অনুমোদিত। কিন্তু আমরা গবেষণায় দেখেছি, রিসাইকেল (পুনর্ব্যবহার) প্রক্রিয়ায় এসব প্লাস্টিক খেলনা, খাবার প্যাকেজিং ও রান্নার সরঞ্জামের মতো পণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে বিষাক্ত রাসায়নিকগুলো এসব পণ্যে ছড়িয়ে পড়ছে, যা তৈরি করছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি।
রাসায়নিকগুলো আমাদের শরীরে ও খাদ্যশৃঙ্খলে ঢুকে পড়ছে। স্বল্প মাত্রায়ও এসব রাসায়নিক শরীরের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। গবেষণায় উঠে এসেছে, এর ফলে ক্যানসার, হরমোনজনিত সমস্যা, স্নায়বিক ক্ষতি, প্রজনন ও বিকাশজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ডেকা-বিডিই একটি ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান। স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় এটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ‘টক্সিক-ফ্রি ফিউচার’-এর এই গবেষণায় গবেষকেরা কিছু নমুনায় অনুমোদিত মাত্রার চেয়ে ৫ থেকে ১ হাজার ২০০ গুণ ডেকা-বিডিই পেয়েছেন!
তাহলে কী করা উচিত
গবেষকেরা কালো প্লাস্টিক ঘর থকে সরিয়ে ফেলতে বলছেন। তাঁরা এটির পুনর্ব্যবহারকেও নিরুৎসাহিত করছেন। এর পরিবর্তে স্টেইনলেস স্টিল বা কাঠের তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।
অভিভাবকদের শিশুর খেলনার ব্যাপারেও সচেতন হতে হবে। প্লাস্টিকের খেলনার পরিবর্তে অন্য কোনো উপাদানে তৈরি খেলনা খুঁজে নিতে বলেছেন গবেষকেরা।
বিষাক্ত এসব রাসায়নিকের সংস্পর্শ কমানোর জন্য আরও কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। যেমন নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করা এবং জানালা খুলে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা। এতে ধুলা বা বাতাসে জমে থাকা রাসায়নিক দূর হয়। ঘন ঘন হাত ধোয়া ও ভেজা কাপড় দিয়ে মেঝে মোছা ধুলার দূষণ থেকে বাঁচাবে।