শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
Logo

যে ৭টি বিষয়কে খারাপ মনে হলেও আসলে শরীরের জন্য ভালো

Journalist Name

উত্তরভূমি বার্তাকক্ষ

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৩৫পিএম

যে ৭টি বিষয়কে খারাপ মনে হলেও আসলে শরীরের জন্য ভালো

১. আলু

আলুর মতো সুস্বাদু খাবার কমই আছে। এটিকে অনেকেই অস্বাস্থ্যকর ভাবে। সমস্যা শুরু হয় তখন, যখন আলুকে গভীর তেলে ভেজে লবণ ছিটিয়ে খাওয়া হয়। এই আলুই তখন জাংক ফুডে পরিণত হয়। কিন্তু সেদ্ধ বা বেক করা আলু? একেবারে পুষ্টিতে ভরা খাবার। গবেষণায় দেখা গেছে, আলু হচ্ছে সবচেয়ে সতেজ রাখা ও তৃপ্তি দেওয়া খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম। মাত্র ১০০ গ্রাম বেক করা আলুতে থাকে প্রায় ৯৩ ক্যালরি। যা খেলে পেট ভরে যায়, কিন্তু পরিমিত খেলে ওজন বাড়ে না। আর দাম? সবচেয়ে সাশ্রয়ী!

২. পপকর্ন

পপকর্ন শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে সিনেমা হলের বিশাল বাক্স, তেল আর অতিরিক্ত লবণ দেওয়া ভুট্টা। অনেকেই বলে, এটি অস্বাস্থ্যকর। কিন্তু সত্যি হলো, এয়ার-পপড পপকর্ন কিছুটা স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যদি এটি বাতাসে ফোলানো হয় ও হালকা মসলায় মেশানো হয়, তবে পপকর্ন একটি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার। এটি শস্যদানা। উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার। হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস ও ক্যানসারের মতো রোগের ঝুঁকি কমায়।

সিনেমা হলের পপকর্নে থাকতে পারে ১ হাজার ৯০ ক্যালরি আর ২ হাজার ৬৫০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম। বাসায় বানালে পুষ্টিকরও হবে, পকেটের টাকাও বাঁচবে।

৩. চর্বিযুক্ত খাবার

সব চর্বি খারাপ নয়। হার্ভার্ড হেলথ অনুযায়ী, ভালো চর্বি হলো মনোআনস্যাচুরেটেড ও পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। পাবেন বাদাম, মাছ, বীজ, জলপাই তেলে। খারাপ চর্বি হলো ট্রান্স ফ্যাট, যা প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট, যেটা ঘরে জমে যায়, মাঝেমধ্যে খাওয়া যেতে পারে, তবে দৈনিক ক্যালরির ১০ শতাংশের বেশি নয়।

৪. চকলেট

সব চকলেট খারাপ নয়। ডার্ক চকলেট অর্থাৎ ৭০ শতাংশ কোকো বা তার বেশি অ্যান্টি–অক্সিডেন্টে ভরপুর। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, মন ভালো রাখে এবং হালকা মুড বুস্টার হিসেবেও কাজ করে।

৫. কিছু না করা

আজকাল সবাই ‘ব্যস্ত’। কিন্তু মাঝেমধ্যে কিছু না করা, এটাই হয়তো আপনার শরীর ও মনের জন্য সবচেয়ে দরকারি কাজ। চুপচাপ বসে থাকা, কোনো পরিকল্পনা না থাকা, শুধু নিশ্বাস নেওয়া এই ‘কিছু না করাই’ আসলে একধরনের বিশ্রাম। এ সময়টা আপনি ধ্যান বা মেডিটেশনে কাজে লাগাতে পারেন। নিয়মিত ধ্যান করলে মানসিক চাপ কমে, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে থাকে, মনোযোগ বাড়ে এবং আসক্তি কমে। তাই মাঝেমধ্যে একটু থেমে যান। কিছু করবেন না, এটাই কাজ।

৬. ময়লা হওয়া (বিশেষ করে শিশুদের জন্য)

সাধারণত শিশুদের দেখলেই যে কথাগুলো বলে থাকি আমরা—

‘দৌড়াবে না।’

‘মাটি ধরবে না।’

‘দোলনায় চড়বে না!’

আর ময়লা হওয়া, সেটা তো একেবারেই হওয়া যাবে না!

কিন্তু বিবিসির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘যে জীবাণুগুলো আসলে আমাদের অসুস্থ করে না, বরং শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে “প্রশিক্ষিত” করে, তারাই গুরুত্বপূর্ণ।’ এই ‘বন্ধুর মতো জীবাণুগুলো’ মাটির সঙ্গে আসে, প্রকৃতিতে মিশে থাকে, আর আমাদের শরীরকে শেখায় অপ্রয়োজনে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া না দেখাতে।

শহুরে জীবনে শিশুরা কিন্তু এই সুযোগ পায় না। ফলে তাদের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা অতি সংবেদনশীল হয়ে যাচ্ছে। তাই সন্তানদের খেলতে দিন, মাটিতে গড়াগড়ি খেতে দিন। এক আধটু ময়লা হলে তাদের শরীরের জন্যই ভালো!

৭. একঘেয়েমি বা ‘বোর’ লাগা

আলফা প্রজন্মকে জিজ্ঞেস করে দেখুন, আজকাল বোর হওয়া একরকম অপরাধই। সব সময় কিছু না কিছু করতে হয়, ভিডিও দেখা, ফোন স্ক্রল করা বা অন্য কিছু করা। কিন্তু মাঝেমধ্যে ‘বোর’ হওয়া ভালো। এ সময়ই মস্তিষ্কে নতুন নতুন চিন্তা আসে, সমস্যার সমাধানও পাওয়া যায়। কথায় আছে না, ‘গোসলের সময় বুদ্ধি আসে!’