শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫
Logo

প্রতিদিন সকালে ওটস খাচ্ছেন? কী বলছেন পুষ্টিবিদরা

Journalist Name

উত্তরভূমি বার্তাকক্ষ

প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:০৯পিএম

প্রতিদিন সকালে ওটস খাচ্ছেন? কী বলছেন পুষ্টিবিদরা

বর্তমান সময়ে হেলদি ব্রেকফাস্ট অপশন হিসেবে সবার কাছে একটা বিশেষ জায়গা দখল করে নিয়েছে ওটস। সাধারণত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর এই খাবারটিকে অনেকে দুধ, ফল, সিডস মিশিয়ে খেতে পছন্দ করেন, কেউ আবার স্মুদি বানিয়ে। 

অনেকে আবার নিজেদের মতো করে পোহা, খিচুড়ির স্টাইলে আপন করে নিয়েছে। এতে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজের পরিমাণ বেশি থাকে এবং এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

তবে প্রতিদিন শুধু ওটস খাওয়া শরীরের জন্য কিন্তু সবসময় ভালো নাও হতে পারে।

পুষ্টিবিদরা জানান, অতিরিক্ত ওটস খাওয়ার কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, যা অনেকেই জানেন না। প্রতিদিন যদি ওটস আপনার ডায়েটে থেকে থাকে, তাহলে এবার একটু ভাবার সময় এসেছে। কিন্তু কেনই বা প্রতিদিন ওটস খাওয়া ঠিক নয়? চলুন, জেনে নেওয়া যাক—

গ্লুটেন সেনসিটিভিটির ঝুঁকি

ওটস স্বাভাবিকভাবে গ্লুটেন-মুক্ত হলেও অনেক সময় সেগুলো এমন জায়গায় একসঙ্গে প্রক্রিয়াজাত হয়, যেখানে গম বা বার্লি-ও প্রক্রিয়া করা হয়।

ফলে ‘ক্রস-কন্টামিনেশনে’র মাধ্যমে তার মধ্যে গ্লুটেন ঢুকে যেতে পারে। সিলিয়াক ডিজিজ বা গ্লুটেন অ্যালার্জি থাকলে এটি শরীরে ইনফ্লেমেশন বা প্রদাহ, পেটের অস্বস্তি ও অন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ, শুধু ‘সার্টিফায়েড গ্লুটেন-ফ্রি ওটস’ বেছে নিন।

গ্যাস ও হজমের সমস্যা

ওটসে প্রচুর ফাইবার থাকায় হজমে সহায়তা করে ঠিকই।

তবে যাদের ফাইবার হজমের অভ্যাস নেই, তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ওটস খাওয়া গ্যাস, পেট ফুলে যাওয়া বা পেটে ব্যথা তৈরি করতে পারে।

পুষ্টিবিদদের পরামর্শ, শুরু থেকেই ওটস প্রতিদিন ডায়েটে না রেখে ধীরে ধীরে খাওয়া শুরু করতে পারেন। ফাইবার ইনটেক আস্তে আস্তে বাড়ান, একসঙ্গে বেশি খাবেন না। বুঝে নিন আপনার শরীর তাতে কী রকম প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে। তাতে কোনোরকম অস্বস্তিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই ওটসের পুষ্টি ডায়েটে যোগ করে নিতে পারবেন।

মিনারেলস শোষণে বাধা

ওটসে থাকা ফাইটিক এসিড শরীরের ক্যালসিয়াম, আয়রন ও জিঙ্ক শোষণে বাধা দেয়। দীর্ঘদিন নিয়মিত ওটস খেলে খনিজের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। ওটস রান্নার আগে ভিজিয়ে রাখলে বা ফারমেন্ট করলে ফাইটিক এসিড কমে যায়। তাতে আরো শোষণ ঠিকঠাক হয়। এতে সকালে হয়তো ব্রেকফাস্ট বানানোর ঝামেলা বাড়ে, তবে শরীরের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ভালো ফল দেয়।

ওজন বৃদ্ধি

ওটস সাধারণত ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কিন্তু অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে তা ক্যালরিও বাড়ায়। প্রতি ১০০ গ্রামে প্রায় ৩৭৯ ক্যালরি থাকে। তাই প্রতিদিন বড় বাটি ভর্তি করে খেলে ওজন বাড়ার আশঙ্কা থাকে। ছোট ছোট ভাগে খেলে ক্যালরি ম্যানেজ করা সুবিধা।

পুষ্টির ঘাটতি

ওটসকে মোটামুটি পুষ্টিকর বলা হলেও এতে কিন্তু সব প্রয়োজনীয় পুষ্টি নেই। প্রতিদিন ব্রেকফাস্টে শুধু ওটস খেলে প্রোটিন, ভিটামিন ও অন্যান্য মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টের ঘাটতি হতে পারে। পুষ্টিবিদের পরামর্শ, ব্রেকফাস্টে ব্যালেন্স রাখতে এর সঙ্গে ফল, ডিম, দই বা শাক-সবজি রাখুন।

সপ্তাহে কতদিন ওটস খাওয়া উচিত?

পুষ্টিবিদরা বলছেন, ওটস সপ্তাহে ২–৩ বার খাওয়া যেতে পারে। এতে উপকারও পাবেন। আবার শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হবে না।

ওটসের কিছু উপকারিতা

হার্টের উন্নতি করে, খারাপ কোলেস্টেরল কমায়।

শক্তি বাড়ায় ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে।

রক্তে সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

হজম ভালো রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

ওটস খাওয়ার সঠিক উপায়

সপ্তাহে কয়েকদিন ওভারনাইট দই, চিয়া সিডস ও ফল মিশিয়ে ওটস খান। অন্য দিনগুলোতে ব্রেকফাস্টে স্মুদি, ডিম বা সবজির ওমলেট রাখুন। তাতে ব্যালেন্স বজায় থাকবে।