রাত ঠিক ১২টায় ঘুমিয়ে পড়েছেন, সকাল ৮টায় ঘুম থেকে ওঠবেন। ফোনের অ্যালার্ম ঠিক আটতেই বেজে ওঠল। তবে অ্যালার্ম বন্ধ করে আপনি আবারও ঘুমিয়ে পড়েছেন। পযার্প্ত ঘুমের পরও আবার ঘুম পাচ্ছে? সারা দিনের ক্লান্তির পর মানুষের বিশ্রাম প্রয়োজন। এই বিশ্রামের জন্য সবার প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। বয়সভেদে ঘুমের পরিমাণ পরিবর্তন হতে পারে। তবে একজন স্বাভাবিক মানুষের ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমের দরকার হয়।
অনেকে ভাবেন পর্যাপ্ত ঘুমের পরও আবার ঘুম পাওয়া ভয়াবহ রোগের লক্ষণ, আবার কেউ মনে করে ক্লান্তি কারণে এমন ঘুম পায়। তবে আদৌ কী?
চলুন জেনে নেওয়া যাক- অতিরিক্ত ঘুম কেন পায়?
সারাক্ষণ ঘুমঘুম ভাব বা অতিরিক্ত তন্দ্রার সমস্যাকে বলা হয় ‘হাইপারসোমনিয়া’। এ অবস্থায় রাতে যথেষ্ট ঘুমানোর পরও দিনে অতিরিক্ত ঘুম ঘুম লাগে, ফলে দৈনন্দিন জীবন ও কাজকর্ম ব্যাহত হয়। অতিরিক্ত মদপান, মানসিক চাপ ও বিষণ্নতা থেকেও এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকেই এই ঘুম ভাব দূর করতে বেশি পরিমাণে চা বা কফি পান করেন, যা পরবর্তীতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করে। নিচে হাইপারসোমনিয়া থেকে মুক্তির কয়েকটি সহজ উপায় দেওয়া হলো।
এ ছাড়া কিছু ভিটামিনের কারণে ও আয়রনের কারণ শরীরে ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারে। আয়রন, ভিটামিন বি১২ ও ভিটামিন ডি-র ঘাটতি শরীরে ক্লান্তি তৈরি করতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত মানসিক চাপও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ। তাই নিজের জন্য কিছুটা সময় রাখা জরুরি। ক্লান্তি অনেক রোগের উপসর্গও হতে পারে— যেমন স্লিপ অ্যাপনিয়া, হাইপোথাইরয়েডিজম, ক্যানসার, ক্রনিক ফ্যাটিগ সিনড্রোম, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস, কিডনি রোগ, বিষণ্নতা, ডায়াবেটিস এবং ফাইব্রোমায়ালজিয়া। যদি দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ী ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে সঠিক পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
স্টেরয়েড, রক্তচাপের ওষুধ এবং অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টসহ কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অনিদ্রা ও ক্লান্তি দেখা দিতে পারে। একইভাবে, অতিরিক্ত প্রক্রিয়াজাত খাবার (ultra-processed food) শরীরের শক্তির ভারসাম্য নষ্ট করে দিতে পারে। তাই খাদ্যতালিকায় ফল, শাকসবজি, ডাল এবং বাদামের মতো পুষ্টিকর খাবার অন্তর্ভুক্ত করা ক্লান্তি কমাতে সহায়ক। অন্যদিকে, অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়ের ওপর নির্ভরতা ঘুমের মান নষ্ট করে, যার ফলে শরীর আরও বেশি ক্লান্ত অনুভব করতে পারে।
এমনকি পানিশূন্যতাও শরীরের শক্তি কমিয়ে ক্লান্তির অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার গ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। স্থূলতা ঘুমের মান নষ্ট করতে পারে এবং অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো ঘুমজনিত সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়, যার ফলে সারাদিন ঘুম ঘুম ভাব দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া মাদক বা অ্যালকোহল সেবনও শরীরকে দুর্বল ও ক্লান্ত করে তুলতে পারে।